top of page

লজিক গেট | মৌলিক ও যৌগিক লজিক গেট । সার্বজনীন গেট । বিশেষ গেট



লজিক গেট কী?

লজিক গেট হল ডিজিটাল সার্কিটের বেসিক বিল্ডিং ব্লক বা মৌলিক উপাদান। এটি একটি ইলেকট্রনিক সার্কিট যা এক বা একাধিক ইনপুট গ্রহণ এবং কেবল একটি আউটপুট দেয়। ইনপুটে উপস্থিত ডিজিটাল সংকেতের সংমিশ্রণের ভিত্তিতে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়। IC এর মূলে রয়েছে লজিক গেট এবং এটি মূলত বুলিয়ান ফাংশন বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহৃত হয়।



লজিক গেট কত প্রকার?




মৌলিক লজিক গেট কী?

যেসকল গেইট দ্বারা বুলিয়ান অ্যালজেবরার মৌলিক অপারেশনগুলো বাস্তবায়ন করা যায় তাদেরকে মৌলিক লজিক গেইট বলা হয়। মৌলিক লজিক গেইটের সাহায্যে সকল যৌগিক গেইট ও যেকোন সার্কিট তৈরি করা যায়। ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্সে মৌলিক লজিক গেইট তিনটি। যথা-

  • অর গেইট (OR Gate)

  • অ্যান্ড গেইট (AND Gate)

  • নট গেইট (NOT Gate)


অর গেট (OR Gate):

OR গেইট হচ্ছে যৌক্তিক যোগের গেইট। অর্থাৎ বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যৌক্তিক যোগের কাজ সম্পাদনের জন্য যে গেইট ব্যবহার করা হয়, তাকে OR গেইট বলা হয়। OR গেইটে দুই বা ততোধিক ইনপুট লাইন থাকে এবং একটিমাত্র আউটপুট লাইন থাকে। যেহেতু OR গেইট যৌক্তিক যোগের গেইট তাই এটি যৌক্তিক যোগের নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ এই গেইটের ক্ষেত্রে যেকোনো একটি ইনপুটের মান ১ হলে আউটপুট ১ হয়, অন্যথায় ০ হয়।

OR গেইটের সুইচিং সার্কিটের সুইচগুলো সমান্তরালে সমবায়ে যুক্ত থাকে। ফলে যেকোন একটি সুইচ অন(1) থাকলে বাল্বটি জ্বলে।

দুই ইনপুট(A & B) বিশিষ্ট OR গেটঃ




তিন ইনপুট(A, B & C) বিশিষ্ট OR গেটঃ



অ্যান্ড গেট (AND Gate):

AND গেইট হচ্ছে যৌক্তিক গুণের গেইট। অর্থাৎ বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যৌক্তিক গুণের কাজ সম্পাদনের জন্য যে গেইট ব্যবহার করা হয়, তাকে AND গেইট বলা হয়। AND গেইটের ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক ইনপুট লাইন থাকে এবং একটি মাত্র আউটপুট লাইন থাকে। যেহেতু AND গেইট যৌক্তিক গুণের গেইট তাই এটি যৌক্তিক গুণের নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ এই গেইটের ক্ষেত্রে যেকোনো একটি ইনপুটের মান ০ হলে আউটপুট ০ হয়, অন্যথায় ১ হয়।


AND গেইটের সুইচিং সার্কিটের সুইচগুলো শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত থাকে। ফলে যেকোন একটি অফ(0) থাকলে বাল্বটি জ্বলে না।

দুই ইনপুট(A & B) বিশিষ্ট AND গেটঃ




তিন ইনপুট(A, B & C) বিশিষ্ট AND গেটঃ


নট গেট (NOT Gate):

NOT গেইট হচ্ছে যৌক্তিক পূরকের গেইট। একে ইনভার্টার ও বলা হয়। অর্থাৎ বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যৌক্তিক পূরকের কাজ সম্পাদনের জন্য যে গেইট ব্যবহার করা হয়, তাকে NOT গেইট বলা হয়। এই গেইটে একটি মাত্র ইনপুট লাইন এবং একটি মাত্র আউটপুট লাইন থাকে। যেহেতু NOT গেইট যৌক্তিক পূরকের গেইট তাই এটি যৌক্তিক পূরকের নিয়ম মেনে চলে। এই গেইটের ক্ষেত্রে আউটপুট হয় ইনপুটের বিপরীত। অর্থাৎ ইনপুট সংকেত ১ হলে আউটপুট সংকেত ০ হয় অথবা ইনপুট সংকেত ০ হলে আউটপুট সংকেত ১ হয়।

NOT গেইটের সুইচিং সার্কিটে একটিমাত্র সুইচ থাকে যা বাল্ব এর সাথে সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত থাকে। ফলে সুইচটি অফ(0) থাকলে বাল্বটি জ্বলে কিন্তু সুইচটি অন(1) থাকলে বাল্বটি জ্বলে না।


যৌগিক গেট কী?

দুই বা ততোধিক মৌলিক গেইটের সাহায্যে যে গেইট তৈরি করা হয় তাকে যৌগিক গেইট বলে। যেমন- AND Gate +NOT Gate = NAND Gate, OR Gate + NOT Gate = NOR Gate। যৌগিক গেইটকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

  • সার্বজনীন গেট (NOR ও NAND)

  • বিশেষ গেট (X-OR ও X-NOR)

সার্বজনীন গেট কী ?

যে গেইট এর সাহায্যে মৌলিক গেইটসহ (AND,OR,NOT) যেকোন গেইট এবং যেকোন সার্কিট বাস্তবায়ন করা যায় তাকে সার্বজনীন গেইট বলে। NAND ও NOR গেইটকে কে সার্বজনীন গেইট বলা হয়। কারণ শুধুমাত্র NAND গেইট বা শুধুমাত্র NOR গেইট দিয়ে মৌলিক গেইটসহ যেকোনো লজিক গেইট বা সার্কিট বাস্তবায়ন করা যায়। সার্বজনীন গেইট তৈরিতে খরচ কম বিধায় ডিজিটাল সার্কিটে এই গেইট বেশি ব্যবহৃত হয়।



চিত্রঃ সার্বজনীন গেইট

নর গেট (NOR Gate):

NOR গেইট একটি যৌগিক গেইট যা OR গেইট ও NOT গেইটের সমন্বয়ে তৈরি। OR গেইটের আউটপুটকে NOT গেইটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করলে NOR গেইট পাওয়া যায়। OR গেইটের আউটপুটকে উল্টিয়ে দিলে NOR গেইটের আউটপুট পাওয়া যায়।



চিত্রঃ OR Gate + NOT Gate = NOR Gate

NOR গেইটে দুই বা ততোদিক ইনপুট লাইন থাকে এবং একটি মাত্র আউটপুট লাইন থাকে। NOR গেইট কে যৌগিক গেইট এবং সার্বজনীন গেইটও বলা হয়।

দুই ইনপুট(A & B) বিশিষ্ট NOR গেটঃ




তিন ইনপুট(A, B & C) বিশিষ্ট NOR গেটঃ




ন্যান্ড গেট (NAND Gate):

NAND গেইট একটি যৌগিক গেইট যা AND গেইট ও NOT গেইটের সমন্বয়ে তৈরি। AND গেইটের আউটপুটকে NOT গেইটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করলে NAND গেইট পাওয়া যায়। অর্থাৎ AND গেইটের আউটপুটকে উল্টিয়ে দিলে NAND গেইটের আউটপুট পাওয়া যায়।




চিত্রঃ AND Gate + NOT Gate = NAND Gate

NAND গেইটে দুই বা ততোদিক ইনপুট লাইন থাকে এবং একটি মাত্র আউটপুট লাইন থাকে। NAND গেইট কে যৌগিক গেইট এবং সার্বজনীন গেইটও বলা হয়।

দুই ইনপুট(A & B) বিশিষ্ট NAND গেটঃ



তিন ইনপুট(A, B & C) বিশিষ্ট NAND গেটঃ


বিশেষ গেট কী?

X-OR ও X-NOR গেইট দুটিকে বলা হয় বিশেষ গেইট।



চিত্রঃ বিশেষ গেইট

X-OR গেটঃ

Exclusive OR গেইটকে সংক্ষেপে X-OR গেইট বলা হয়। এটি একটি যৌগিক গেইট যা AND, OR ও NOT গেইটের সমন্বয়ে তৈরি। এই গেইটের মাধ্যমে বিভিন্ন ইনপুট বিট তুলনা করে আউটপুট সংকেত পাওয়া যায়। ইনপুটে বিজোড় সংখ্যক ১ থাকলে আউটপুট ১ হয়, অন্যথায় ০ হয়। X-OR অপারেশনকে ⊕ চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

X-OR গেইটে দুই বা ততোদিক ইনপুট লাইন থাকে এবং একটি মাত্র আউটপুট লাইন থাকে। X-OR গেইট কে যৌগিক গেইট এবং বিশেষ গেইটও বলা হয়।

দুই ইনপুট(A & B) বিশিষ্ট XOR গেটঃ



XOR গেইটের সত্যক সারণি থেকে SOP মেথডের সাহায্যে নিম্নরূপ বুলিয়ান ফাংশন লিখতে পারি-

F = A´ B + A B´

বুলিয়ান ফাংশনটিকে বাস্তবায়ন করে পাই-




চিত্রঃ মৌলিক গেইট দিয়ে X-OR গেইট বাস্তবায়ন


তিন ইনপুট(A, B & C) বিশিষ্ট XOR গেটঃ




XOR গেইটের সত্যক সারণি থেকে SOP মেথডের সাহায্যে নিম্নরূপ বুলিয়ান ফাংশন লিখতে পারি-

F = A´B´C + A´BC´ + AB´C´ + ABC

উপরের বুলিয়ান ফাংশনটি বাস্তবায়ন কর।


XNOR গেটঃ

Exclusive NOR গেইটকে সংক্ষেপে X-NOR গেইট বলা হয়। এটি একটি যৌগিক গেইট যা AND, OR ও NOT গেইটের সমন্বয়ে তৈরি। X-OR গেইটের আউটপুট NOT গেইটের মধ্যে প্রবাহিত করলে X-NOR গেইট পাওয়া যায়। অর্থাৎ X-OR গেইটের আউটপুটকে উল্টিয়ে দিলে X-NOR গেইটের আউটপুট পাওয়া যায়। অর্থাৎ ইনপুটে বিজোড় সংখ্যক ১ থাকলে আউটপুট ০ হয়, অন্যথায় ১ হয়।




চিত্রঃ XOR Gate + NOT Gate = XNOR Gate

X-NOR গেইটে দুই বা ততোদিক ইনপুট লাইন থাকে এবং একটি মাত্র আউটপুট লাইন থাকে। X-NOR গেইট কে যৌগিক গেইট এবং বিশেষ গেইটও বলা হয়।


দুই ইনপুট(A & B) বিশিষ্ট XNOR গেটঃ




XNOR গেইটের সত্যক সারণি থেকে SOP মেথডের সাহায্যে নিম্নরূপ বুলিয়ান ফাংশন লিখতে পারি-

F = A´B´ + AB

বুলিয়ান ফাংশনটিকে বাস্তবায়ন করে পাই –




চিত্রঃ মৌলিক গেইট দিয়ে X-NOR গেইট বাস্তবায়ন

তিন ইনপুট(A, B & C) বিশিষ্ট XNOR গেটঃ



XNOR গেইটের সত্যক সারণি থেকে SOP মেথডের সাহায্যে নিম্নরূপ বুলিয়ান ফাংশন লিখতে পারি-

F = A´B´C´ + A´BC + AB´C + ABC´

বুলিয়ান ফাংশনটি বাস্তবায়ন কর।

bottom of page